মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষার আলো: গঙ্গাজল তারুণ্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ

Spread the love

আব্দুল মুকিত:::গ্রামে মক্তব শিক্ষার চর্চা হয়তো অনেকের কাছে খুব সাধারণ মনে হতে পারে। কিন্তু সেই সাধারণ শিক্ষাই শিশুদের হৃদয়ে আলোকিত করে তোলে ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ। ঠিক সেই চর্চাকে নতুনভাবে সামনে আনার চেষ্টা করেছে সুলতানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাজল তারুণ্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

ইউনিয়নের ৮০টি মসজিদের প্রায় ৭০০ শিশু-কিশোরকে নিয়ে আয়োজন করা হয় ব্যতিক্রমী মক্তব প্রতিযোগিতা। প্রথম ধাপে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রতিযোগিতায় ৯০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। এরপর বাছাইপর্ব শেষে ৪৫ জনকে নিয়ে হয় গ্র্যান্ড ফাইনাল।

ফাইনালে সেরা দশকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা। প্রথম স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থী পেয়েছে ৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় ৪ হাজার, তৃতীয় ৩ হাজার টাকা, আর চতুর্থ থেকে দশম সবাই পেয়েছে সম্মানজনক অর্থ পুরস্কার। শুধু তাই নয় ফাইনালে অংশগ্রহণকারী সবাইকে পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোরদের উৎসাহিত করার যে প্রচেষ্টা, তা ছিল সত্যিই প্রশংসনীয়।

এই উদ্যোগে সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো তরুণদের পাশাপাশি প্রবীণ ও শিক্ষানুরাগী মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা। যেন গোটা ইউনিয়নই শিশুদের এই সাফল্যে অংশীদার।

আমাদের সমাজে ইসলামিক বুনিয়াদি শিক্ষা আজ এক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার ভিড়ে অনেক সময় বাচ্চারা ধর্মীয় শিক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো থেকে দূরে সরে যায়। অথচ এই শিক্ষাই তাদের চরিত্র গঠন ও নৈতিকতার ভিত তৈরি করে। গঙ্গাজল তারুণ্যের এই আয়োজন তাই কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং মসজিদভিত্তিক শিক্ষার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের এক শক্তিশালী প্রয়াস।

সুলতানপুর ইউনিয়নে শুরু হলেও এই উদ্যোগ যদি উপজেলা, জেলা, এমনকি জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তবে প্রজন্মের মধ্যে এক নবজাগরণ সৃষ্টি হতে পারে। ইসলামিক বুনিয়াদি শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে এ ধরনের আয়োজনই হতে পারে আমাদের পথপ্রদর্শক।

আমাদের প্রত্যাশা, তরুণ সমাজ শুধু গঙ্গাজল নয় বাংলাদেশের সর্বত্র একইভাবে এগিয়ে আসবে। কারণ, শিশুদের অন্তরে সঠিক শিক্ষার আলো জ্বালাতে পারলেই সমাজ আলোকিত হবে, দেশও এগিয়ে যাবে।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *