ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের পাগড়ি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

Spread the love

আল কুরআন মুহাম্মদ (সা.) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মুজিযা
-সায়্যিদ আসিম আদি ইয়াহইয়া

মদীনা শরীফের প্রখ্যাত বুযুর্গ, রাসূলে পাক (সা.) এর ৩৯তম বংশধর সায়্যিদ আল হাবীব আসিম আদি ইয়াহইয়া বলেছেন, প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সর্বশ্রেষ্ঠ মুজিযা আল কুরআন। সকল নবীর মুজিযা ইন্তেকালের সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মুজিযা বাকী রয়েছে। আল কুরআন এর অনন্য প্রমাণ। অমুসলিমরাও এটি অস্বীকার করতে পারেনি। আমাদের পূর্বসূরিরা সিলসিলা ও সনদের মাধ্যমে আল কুরআন সংরক্ষণ ও এর শিক্ষা বিস্তারে কতইনা কষ্ট করেছেন। যারা কারী ও হাফিযে কুরআন আপনারা এ কুরআন সংরক্ষণের ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। হাফিযে কুরআনদের কতইনা মর্যাদা। কিয়ামতের দিন তাদের বলা হবে, পড়তে থাকো এবং উঠতে থাকো। তোমার স্থান হলো সেই উচ্চ স্থানে, তিলাওয়াত করতে করতে তুমি যেখানে গিয়ে পৌঁছবে। হাফিযে কুরআনগণ মা বাবার প্রতি সর্বোত্তম সদাচারকারী। কারণ, তাদের ওসীলায় কিয়ামতের দিন তাদের মা-বাবার মাথায় নূরের তাজ পরানো হবে এবং তারা বহু মানুষের জন্য সুপারিশ করবেন। যারা হাফিয হয়েছেন আজ তারা খুশি। কিন্তু সেদিন তারা সবচেয়ে বেশি খুশি হবেন সেদিন ফেরেশতারা কুরআন অনুযায়ী আমল করার জন্য তাদের বেষ্টন করে রাখবেন। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ, ২০২৪) ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের ২০২৩ সনে হিফয সম্পন্নকারী ছাত্রদের সাটিফিকেট ও পাগড়ি প্রদান এবং জাতীয় হিফযুল কুরআন প্রতিযোগিতা ২০২৩ এর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) ও তাঁর সন্তান-সন্ততিগণের সকল খিদমাতের মকবূলিয়ত কামনা করেন।

সিলেট নগরীর আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সভাপতি মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যখন যাই তখন কুরআনের আওয়াজ শুনি। মনে হয় যেন হযরত ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) এর খিদমত কবূল হয়েছে। আজকে এ মাহফিলে বসে মনে হয়েছে দরবারে রিসালতের দুআর যেন খুলে গেছে।
বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মোহাম্মদ নজমুল হুদা খান এর পরিচালনায় ও বোর্ডের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী ফুলতলীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রখ্যাত বুযুর্গ সায়্যিদ জুনাইদ আহমদ মাদানী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব মাওলানা মুফতি এ কে এম মনোওর আলী, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ।

সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত মাওলানা শিহাব উদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, মদীনা মুনাওয়ারা থেকে আগত রাসূল (সা.) এর ৪০তম বংশধর সায়্যিদ আল হাবীব হামযা আসিম আদি ইয়াহইয়া, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহীম, সিলেটের অন্যতম বয়োজ্যৈষ্ঠ হাফিযে কুরআন ভুরকীর বড়হুজুর হাফিয আব্দুশ শহীদ, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম, আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, সোবহানীঘাট হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবূ ছালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম।
এতে বক্তব্য রাখেন বুরাইয়া কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, লক্ষণাবন্দ ফুরকানিয়া হাফিযিয়া মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফিয আব্দুল আজিজ, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ মাদরাসা পনাউল্লাহ বাজার এর প্রধান শিক্ষক হাফিয আব্দুল কাদির, বোর্ডের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য লতিফিয়া হিফযুল কুরআন মাদরাসা সিলেট এর পরিচালক হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, শাহজালাল রহমানিয়া দারুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা সিলেট এর প্রধান শিক্ষক হাফিয মাওলানা আব্দুল মুক্তাদির, মাদরাসা-ই-দারুল মোস্তফা’র প্রধান শিক্ষক হাফিয মাওলানা ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, মাসিক পরওয়ানার সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, লতিফিয়া কারী সোসাইটি মাধবপুর উপজেলা সভাপতি কাজী মাও. আলা উদ্দিন আহমদ, মাদার বাজার সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা সৈয়দ শহীদ আহমদ বোগদাদী, দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের অফিস প্রধান মাওলানা জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন, তায়্যিবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরী, লতিফিয়া এতীমখানার ব্যবস্থাপক মাওলানা ফারহান আহমদ চৌধুরী রেদা, লতিফি হ্যান্ডস এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার লোকমান আহমদ চৌধুরী সাদি, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ হাফিয আশিকুর রহমান, হযরত গোলাব শাহ র. হাফিযিয়া মাদরাসা প্রধান শিক্ষক হাফিয মাসুক আহমদ, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হুসাইন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এএসএম মনোয়ার হোসেন, অর্থ সম্পাদক সুলাইমান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর সভাপতি আতিকুর রহমান শাকের, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
আরো উপস্থিত ছিলেন ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের অফিস সম্পাদক সাইদুর রহমান, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হাফিয আব্দুল আজিজ, হাফিয মোহাম্মদ আজাদ আলী, বিশ^নাথ উত্তর উপজেলা সভাপতি হাফিয আব্দুল কাদির, সহ-সভাপতি হাফিয মাও. শফিকুর রহমান, বিশ^নাথ দক্ষিণ উপজেলার সভাপতি হাফিয আব্দুল কাদির, সেক্রেটারি কারী মাহবুবুল ইসলাম আঙ্গুর মিয়া, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সভাপতি হাফিয আব্দুর রশিদ, সেক্রেটারি হাফিয সাজ্জাদুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা সেক্রেটারি হাফিয তাজুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা সভাপতি হাফিয নিজাম উদ্দিন, সেক্রেটারি হাফিয আব্দুশ শহীদ, মাদরাসা-ই দারুল মোস্তফার শিক্ষক হাফিয আব্দুল মুকিত, ভুরকী মতিনিয়া শহীদিয়া হুফ্ফাজুল কুরআন বোর্ডের সভাপতি হাফিয আব্দুল গফ্ফার আল হাসান। লতিফিয়া কারী সোসাইটি বুড়িচং কুমিল্লা শাখার সেক্রেটারি মাও. রবিউল ইসলাম, মোহনগঞ্জ উপজেলার সভাপতি সৈয়দ তুফায়েল আহমদ, ওসমনাীনগর উপজেলা সভাপতি মাও. সাদিকুর রহমান শিবলী, সেক্রেটারি মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন প্রমুখ।
দুই অধিবেশনে বিভক্ত অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। প্রথম অধিবেশন পরিচালনা করেন হাফিয মাওলানা আবূ সাঈদ সেলিম ও হাফিয মাওলানা ইউসুফ মো. শাহান। ভিন্ন ভিন্ন অধিবেশনে কালামে পাক থেকে তিলাওয়াত করেন হাফিয শরীফ উদ্দিন, হাফিয মুনযির আব্দুস সামী ও জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী শিক্ষার্থীবৃন্দ। হামদ, না’ত ও ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন কবি মুজাহিদুল ইসলাম বুলবুল, মাওলানা শাহীদ আহমদ, আব্দুল ওয়াদুদ ময়নুল, শামসুল হাসনাত।
অনুষ্ঠানে হিফয সমাপনকারী ৪৮৪ জন শিক্ষার্থীকে সার্টিফিকেট ও পাগড়ি এবং জাতীয় হিফযুল কুরআন প্রতিযোগিতার জেলা পর্যায়ে বিজয়ী ৪৫ জনকে সম্মাননা ও চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী ১৩ জনকে পুরষ্কার ও সম্মাননা প্রদান করা হয়।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *