গত মার্চ থেকেই চোটের সঙ্গে লড়াই চলছে তাসকিন আহমেদের। পুনর্বাসনপ্রক্রিয়া শেষে বোলিংয়েও ফিরেছেন। সম্প্রতি পেস বোলিংয়ে বাংলাদেশের অন্যতম বড় শক্তি তিনি, তার ওপর বিশ্বকাপের বছর বলে স্বাভাবিকভাবেই তাসকিনের চোট নিয়ে আলোচনা আছে। তবে ২৮ বছর বয়সী এ পেসার বলছেন, ‘গা বাঁচিয়ে খেলা’ তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
২০১৯ বিশ্বকাপে শেষ পর্যন্ত চোটের কারণেই দলে জায়গা পাননি। এবার আরেকটি বিশ্বকাপ, তবে এবারও চোটের সঙ্গেই লড়াই চলছে তাঁর। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ স্বীকৃত ক্রিকেট ম্যাচ খেলা তাসকিন।
বিশ্বকাপের বছরে চোট নিয়ে বাড়তি কোনো সতর্কতা কাজ করছে কি না তাঁর মধ্যে, এমন প্রশ্নের জবাবে তাসকিন বলেন, ‘চোটের কারণে দলের বাইরে থাকার স্বাদটা কখনোই আনন্দদায়ক নয়। ক্রিকেটার হিসেবে খারাপ লাগে। ২০১৯ বিশ্বকাপে যখন বাদ পড়েছিলাম, ওই মুহূর্তটা খুব দুঃখজনক ছিল আমার জন্য। তবে এখন বুঝতে পারি, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। তারপর নিজের ওয়ার্ক-এথিকস, প্রক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। ক্রিকেটার হিসেবে যা আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। একটা আত্মবিশ্বাস থাকে যে আমি নিজের শতভাগ দিচ্ছি এ ক্ষেত্রে। তাই ভালো কিছু হবে আশা করছি।’
চোটের কারণে দলের বাইরে থাকার স্বাদটা কখনোই আনন্দদায়ক নয়। ক্রিকেটার হিসেবে খারাপ লাগে। ২০১৯ বিশ্বকাপে যখন বাদ পড়েছিলাম, ওই মুহূর্তটা খুব দুঃখজনক ছিল আমার জন্য। তবে এখন বুঝতে পারি, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
তাসকিন আহমেদ
তবে এরপরই যোগ করেছেন, ‘আরেকটা জিনিস যেটা, গা বাঁচিয়ে খেলা আমার জন্য সম্ভব নয়। বল হাতে নিয়ে খেলতে নামলে এটা মাথায় থাকেই না যে কীভাবে নিরাপদে খেলা যায়। আর আমি তো ফাস্ট বোলার। লাল-সবুজের হয়ে খেলাটা অনেক গর্বের একটা ব্যাপার। শুধু এটা না, ক্রিকেটটাই আসলে…। তো যখন খেলতে নামি, মাথায় এটা থাকে না যে সামনে বড় ইভেন্ট আছে না কী আছে। আল্লাহ যাতে সুস্থ রাখেন, এটাই সব সময় দোয়া করি।’
বোলিংয়ে ফিরে এর মধ্যে চারটি সেশন করেছেন তাসকিন, ক্রমান্বয়ে ওয়ার্কলোড বাড়াচ্ছেন। আপাতত আফগানিস্তান সফর দিয়েই জাতীয় দলে ফেরার আশা তাঁর। আগামী মাসে শুরু এ সিরিজে খেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহ যদি চায়। এখন দেখি কী হয়।’
চোটের কারণে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাটিতে একমাত্র টেস্টের পর ইংল্যান্ডে একই প্রতিপক্ষের সঙ্গে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি খেলতে পারেননি। ক্রমেই উন্নতি করতে থাকা বাংলাদেশের পেস আক্রমণ অবশ্য তাসকিনের অভাব সেভাবে বুঝতে দেয়নি। বাংলাদেশের পেস আক্রমণ বিশ্বের সেরা হবে, সেই স্বপ্নের কথা আবারও জানিয়েছেন আজ তাসকিন, ‘এই ইউনিটটা ২-৩ বছর ধরে একত্রে কাজ করছে। এখন একটু আগের চেয়ে অবস্থানে এসেছে। আমাদের সবারই ইচ্ছা, এই পেস ইউনিটটা বিশ্বের সেরা হবে এবং সেই সামর্থ্যও আছে।’
ভারতে বিশ্বকাপ, যেখানে ব্যাটিং–সহায়ক উইকেট থাকবে অনেক ভেন্যুতেই। ফলে পেসারদের জন্য সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ, তাসকিন মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘সব পেস বোলার চাচ্ছে যেন ভালো করতে পারে। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জিং খেলা আসছে। কন্ডিশনগুলা এত সহজ হবে না। ব্যাটিং–সহায়ক বা স্পোর্টিং হবে। তো ফাস্ট বোলার বা স্পিনার—সবারই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। ওটার জন্যই নিজেদের আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করতে হবে মনে করি।’
তবে এমন কন্ডিশনে ভালো করতে পারলে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে, এমন ইতিবাচক দিকও দেখেন তাসকিন, ‘হারানোর ভয়টা কম রেখে যদি এগোতে পারি, আমাদের জন্যই ভালো। এক-দুই দিন খারাপ দিন যেতে পারে যেকোনো বোলার বা ক্রিকেটারের। সেটা যাবেই। তবে আমার বিশ্বাস, আমরা আমাদের সেরা ছন্দের সর্বোচ্চটা বাস্তবায়ন করতে পারলে ওই কন্ডিশনেও ভালো করা সম্ভব। অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা ওই চ্যালেঞ্জটা নেব ইনশা আল্লাহ।’